স্বদেশ ডেস্ক:
আলোচিত ইসলামিক বক্তা মুফতি আমির হামজাকে গ্রেপ্তারের পর এখন তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ডাবিরাভিটা গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পরপরই তাকে ঢাকায় আনা হয়। আজ মঙ্গলবার তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সংসদ ভবনে তলোয়ার নিয়ে হামলার পরিকল্পনায় শেরেবাংলা নগর থানায় করা মামলার সুষ্ঠুতদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক কাজী মিজানুর রহমান। ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলামের আদালতে আজ বেলা ৩টার দিকে এ রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) পুলিশের উপ-পরিদর্শক আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে আদালতে হাজতখানা রাখা হয়। সংশ্লিষ্ট আদালতের হাজতখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি হেফাজত নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের কারণে আত্মগোপনে ছিলেন আমির হামজা। তিনি ওয়াজে ইসলামের নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন, এ ছাড়া ইউটিউবে প্রকাশিত তার বেশ কিছু বক্তব্য উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে, যা শুনে কোমলমতি কিশোর-তরুণরা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে- এমন অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটে তদন্তাধীন একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তাকে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলে ১০ দিনের রিমান্ডে চাইছে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, মুফতি আমির হামজার বিরুদ্ধে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে তদন্তাধীন একটি মামলা রয়েছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গত ৫ মে সংসদ ভবন এলাকা থেকে তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় সাকিব নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় আসামি করা হয় সাকিবসহ আলী হাসান ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবীকে। এছাড়া সাকিবের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাকিবের মোবাইল ফোনে আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুন ইজহার প্রমুখ ব্যক্তির উগ্রবাদের বার্তা সম্বলিত ভিডিও পাওয়া যায়। যা দেখে সে উগ্রবাদে আসক্ত হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাকিব জানান, এক ইসলামী বক্তার নির্দেশে সে এই পরিকল্পনা করেছিল। কয়েকজনের ওয়াজ ও বক্তব্য শুনে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয় বলে জানান তিনি।